মনোমুগ্ধকর কারুকাজ সমৃদ্ধ পুরনো এক জমিদার বাড়ি( Lokkhon Shahar Bari ) দাঁড়িয়ে আছে নরসিংদী জেলার পলাশ উপজেলার, ডাঙ্গা ইউনিয়নের জয় নগর এলাকায়। বাড়িটি শত বছরের পুরনো।
নিপুণ কারুকাজ মণ্ডিত বাড়িটি নির্মাণ করেন মোগল আমলের লক্ষণ সাহা নামে এক জমিদার। পূর্ণাঙ্গ শৈল্পিক ২৪ কক্ষ বিশিষ্ট এই জমিদার বাড়িটির পাশেই রয়েছে ছোট্ট আরেকটি কারুকার্য খচিত মন্দির, রয়েছে একটি অর্ধনির্মিত প্রাচীন বাড়ি। বাড়ির পেছনে রয়েছে গাছ-গাছালি যুক্ত বাগান। বাড়িসহ বাগানের চারিদিকটা উঁচু প্রাচীর দ্বারা বেষ্টিত। রয়েছে সেই সময়ই তৈরি করা জমিদার বাড়ির সুন্দর একটি পুকুর আর সান বাঁধানো ঘাট। পুকুরের পাশে পূজা করার জন্যে রয়েছে একটি বড় আকারের মণ্ডপ।
বিশাল আকৃতির এই জমিদার বাড়িটির বর্তমান মালিকানায় রয়েছে আহম্মদ আলী নামে এক উকিল। যার কারণে এই বাড়িটি এখন উকিলের বাড়ি নামে পরিচিত।
জানা যায়, স্বাধীনতার পর জমিদার লক্ষণ সাহার নাতি বৌদ্ধ নারায়ণ সাহা জমিদারের রেখে যাওয়া সমস্ত সম্পত্তি আহম্মদ আলীর কাছে বিক্রি করে নারায়ণগঞ্জ জেলায় চলে যান। আহম্মদ আলীর স্ত্রীর নাম অনুসারে বাড়িটির নামকরণ করেন জামিনা মহল। মূলত আহম্মদ আলী ওকালতি পেশার সাথে সংযুক্ত ছিলেন বিধায় বর্তমানে এই জমিদার বাড়িটি উকিলের বাড়ি হিসেবেই বেশি পরিচিতি পেয়েছে। বর্তমানে আহাম্মদ আলীও নারায়ণগঞ্জ জেলায় বসবাস করছেন।
যদিও স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়দের মতে, জমিদারের রেখে যাওয়া এই বিশাল সম্পত্তিটি ছিল দেবোত্তর। তত্কালীন ভারতবর্ষে এই এলাকাটি ছিল দেবোত্তর হিসেবে। ঐ সময়ে দেবোত্তর জমি হলে জমিদারকে খাজনা দেওয়া লাগতো না। জমিদার লক্ষণ সাহার ছিল তিন ছেলে নিকুঞ্জ সাহা, পেরিমোহন সাহা ও বঙ্কু সাহা। জমিদার মারা যাওয়ার পর তারা তিন ভাই এই সম্পত্তি দেখভাল করতেন। বঙ্কু সাহা ভারত ভাগের সময় এখান থেকে ভারতে চলে যান। পরবর্তীতে পাকিস্তান থেকে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় হওয়ার কিছু পূর্বে নিকুঞ্জ সাহাও ভারতে চলে যান। এক পর্যায়ে জমিদারের ছোট ছেলে পেরিমোহন সাহা এই সম্পত্তির দেখভাল করেন। পেরিমোহন সাহার বৌদ্ধ নারায়ণ সাহা নামে এক ছেলে ছিল। পেরিমোহন সাহা মারা যাওয়ার পর বৌদ্ধ নারায়ণ এই দেবোত্তার সম্পত্তিটি বিক্রি করে ফেলেন।
জানা গেছে, এলাকার হিন্দু সম্প্রদায় ট্রাস্ট নামে একটি সংগঠন দেবোত্তরকৃত এই সম্পত্তিটি বিক্রি করার পর আদালতে মামলা দায়ের করে। যা এখনো চলমান।
0 Comments
If you have any doubts or questions, let me know.